আকর্ষণীয় ছায়াপথের ছবি যেটাকে নাসার জ্যোতির্বিদরা বলছে ’গ্যালাক্টিক গ্ল্যামার শট’! ছায়াপথের এই পরিষ্কার ছবিটি হাবল স্পেস টেলিস্কোপে সংগ্রহ করা একেবারে সহজ ছিল না। এই শটটি পেতে জ্যোতির্বিদরা একটানা ০৯ ঘন্টা পর্যবেক্ষণ করতে অত্যন্ত পরিশ্রম করেছেন।
গ্যালাক্টিক গ্ল্যামার শট যেভাবে সম্ভব হয়েছে
নাসা জানিয়েছে , এই ভাল করে দেখাটা খুব সহজ একটি বিষয় নয়। নাসার বক্তব্য অনুযায়ী “এতটা বিস্তারিত ও সুন্দর ছবির জন্য প্রয়োজন হয়েছে, হাবল টেলিস্কোপের ৩০টি ভিন্ন ভিন্ন এক্সপোজার, একটানা মোট নয় ঘন্টা পর্যবেক্ষণ সময়।”

হাবল স্পেস টেলিস্কোপের তোলা ছবিটি মুলত গ্যালাক্সি এনজিসি 5643 এর, এটি মিল্কি ওয়ের মতোই একটি সর্পিল ছায়াপথ। অর্থাৎ ছায়াপথটির বাহু ভেতর থেকে বাইরের দিকে পেচানো যা কেন্দ্র থেকে দেখতে অনেকটা সাপের মত।
গ্যালাক্সি এনজিসি 5643 এর অবস্থান আমাদের পৃথিবী থেকে প্রায় ৬০ মিলিয়ন আলোক বর্ষ দুরে। একটি সাম্প্রতিক সুপারনোভা ইভেন্টের (2017cbv) কারনে গ্যালাক্সির এই অংশ আলোকিত হয়ে যায়।
হাবল স্পেস টেলিস্কোপ
হাবল স্পেস টেলিস্কোপ (Hubble Space Telescope, HST), পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উপরে প্রদক্ষিণ করা মানুষের তৈরি ভাসমান দূরবীক্ষণ যন্ত্র। পরিষ্কার দৃশ্য দেখার ক্ষেত্রে হাবল টেলিস্কোপটির বিকল্প এখনও পর্যন্ত নেই, এর উজ্জ্বল দৃশ্য দেখা বা সংগ্রহ করার ক্ষমতা ০.০৫ আর্কসেকেন্ড।
জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডউইন হাবলের (১৮৮৯ – ১৯৫৩) নামে নামকরণ করা টেলিস্কোপটি সৌর শক্তি দ্বারা চালিত। স্পেস টেলিস্কোপটি তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে মোট ৪ বিলিয়ন মাইল পথ ভ্রমণ করেছে। এটা ছায়াপথ এবং গ্রহগুলির অনেক পরিষ্কার ছবি তুলতে পারে।
নাসার পরবর্তী প্রজন্মের স্পেস টেলিস্কোপটির নাম জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। ২০২১ সালের শেষের দিকে মহাকাশে প্রবর্তন করবে বলে আশা করা হচ্ছে এই টেলিস্কোপটি। আয়না সহ এটার বিশালতা হাবল স্পেস টেলিস্কোপটির চেয়ে দ্বিগুণ।
অতি উচ্চমাত্রার এই দূরবীক্ষণ যন্ত্রটির মূলত ছায়াপথের জন্ম ও বিবর্তন এবং নক্ষত্র ও গ্রহসমূহের সৃষ্টি সংক্রান্ত বিষয়ে পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা করবে।
সূত্রঃ nasa.gov