’নাফা’ এবং ’খুম’ শব্দ দুটি থেকে এসেছে ’নাফাখুম’ শব্দটি। মারমা শব্দ নাফা শব্দটি এসেছে রেমাক্রী খালের একটি মাছের নাম থেকে আর খুম শব্দটির অর্থ ঝিরি, ঝর্ণা বা ‘জলপ্রপাত’। প্রবাহের দিক থেকে নাফাখুম বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম জলপ্রপাত। প্রকৃতি যেন এখানে তার সম্পূর্ণ সৈন্দর্য্য অকৃপনভাবে উজাড় করে দিয়েছে। তবে প্রকৃতির এই অপরুপ সৃস্টি নাফাখুম জলপ্রপাত ভ্রমণ এতটা সহজ নয়।
বান্দরবানের অন্যতম জলপ্রপাত নাফাখুম ভ্রমণ করতে আপনাকে পহাড় ও পাহাড়ী খরস্রোতা নদী ট্রেকিং করে উপরে উঠতে হবে। তাই যারা একটু এডভেঞ্চারপ্রিয় তাদের জন্য নাফাখুম ভ্রমণ যতার্থ একটি জায়গা। এখানে পথ যতটা দুর্গম প্রকৃতির রুপ তার থেকেও বেশি সুন্দর।
নাফাখুম জলপ্রপাতের (Nafakhum Waterfall) অবস্থান
বান্দরবন জেলা শহর হতে ৭৯ কি.মি. দুরে থানচি উপজেলার দক্ষিনে রেমাক্রী ইউনিয়ন। এখানেই নাফাকুম জলপ্রপাতের অবস্থান। জায়গাটি সাঙ্গু নদী থেকে উজানে হওয়ায় থানচি বাজার থেকে ধীরে ধীরে নৌকা বেয়ে উপরের দিকে উঠতে হয়। এখানে নদী কিছুদূর পর পর ১ থেকে ২ ফুট এমন কি কোথাও কোথাও ৪ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত ঢালু হয়ে নিচে নেমেছে।
নদীর দুপাশের উচু উচু সবুজে মোড়ানো প্রতিটি পাহাড় যেন মেঘের কোলে শুয়ে আছে অবলিলায়। পাহাড়ের চূড়া কোথাও কোথাও ঢেকে আছে মেঘের আবরণে, সবুজে ঘেরা সে পাহাড়ে মাঝে মাঝে হঠাৎ করেই দেখা মিলবে দু-একটি উপজাতী বসতঘর। নৌকা চড়ে প্রকৃতির এই অপরুপ রুপ দেখতে দেখতে পৌছে যাবেন রোমাক্রী বাজার।
রেমাক্রী বাজার থেকে নাফাখুম জলপ্রপাত আরও আড়াই থেকে তিন ঘন্টার পাহাড়ী পায়ে হাটা রাস্তা। রেমাক্রী খাল ধরে আপনাকে ট্রেকিং করে (পায়ে হেটে হেটে) পৌছাতে হবে নাফাখুম জলপ্রপাত।
নাফাখুম জলপ্রপাত দেখার উপযুক্ত সময়
রেমাক্রী খালের পানি প্রবাহ এই নাফাখুমে এসে হঠাৎ করেই বাঁক নিয়ে ২৫ থেকে ৩০ ফুট নিচে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে নাফাখুম জলপ্রপাত। বর্ষার সময় নাফাখুম জলপ্রপাতের আকার বড় হয় এবং শীতের দিনে পানি প্রবাহ কমে তা ক্ষীন হয়ে যায়। নাফাখুম জলপ্রপাতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সম্পূর্ণরুপে উপভোগ করতে হলে আপনাকে এখানে আসতে হবে শীত এবং বর্ষার মাঝামাঝি কোন এক সময়ে।
আর এই সময় বিবেচনায় সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসের কেন এক সময় বেছে নিন নাফাখুম ভ্রমণের জন্য। এই সময়টাতে জলপ্রপাতটি সম্পূর্নরুপে পানি প্রবাহে ভরপুর থাকে, ফলে উপর থেকে আছড়ে পড়া পানির আঘাতে চারিদিকে ঘন কুয়াশার সৃষ্টি হয়ে থাকে এবং থেমে থেকে বাতাসে উড়ে আসা জলকনা ভিজিয়ে দেবে আপনার শরীর।
নাফাখুম কিভাবে যাবেন
নফাখুম ভ্রমণ করতে হলে প্রথমে আপনাকে বান্দরবান জেলা সদরে আসতেই হবে। এর পর বান্দরবান থেকে থানচি উপজেলা। থানচি থেকে নৌকায় চড়ে সাঙ্গু নদীর উজানে রেমাক্রী বাজার পৌছে আরও আড়াই থেকে তিন ঘন্টার পায়ে হাটা পথে যেতে হয় নাফাখুম জলপ্রপাত। রাজধানী ঢাকাকে কেন্দ্র ধরে নাফাখুম যাবার রুট আলাদা আলাদ করে নিচে আলোচনা করা হয়েছে।
ঢাকা থেকে বান্দরবান
ঢাকা থেকে বান্দবান সরাসরি যেতে সকড় পথ ছাড়া বিকল্প নাই। তবে রেল ও আকাশ পথে চট্টগ্রাম হয়ে বান্দরবান যাওয়া সম্ভব। নিচে সড়ক রেল ও আকাশ পথের বিস্তারিত তথ্য প্রদান করা হয়েছে।
সড়ক পথে ঢাকা থেকে বান্দরবান
ঢাকার গাবতলি, কলাবাগান, আরামবাগ, ফকিরাপুল ও সায়েদাবাদ থেকে থেকে সরাসরি বাস প্রতিদিন বান্দবানের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এর মধ্যে এস. আলম, ইউনিক, হানিফ, শ্যামলি, সৌদিয়া, সেন্টমার্টিন পরিবহন উল্লেখযোগ্য। ঢাকা থেকে বান্দবান যেতে জনপ্রতি নন এসি বাসের ভাড়া ৫৫০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ৯৫০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা।
রেলপথে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে বান্দরবান
ঢাকা থেকে রেলপথে চট্রগ্রাম হয়ে বান্দবান যেতে পারবেন সেক্ষেত্রে চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান পর্যন্ত আপনাকে বাসে অথবা ব্যাক্তিগত/ভাড়া গাড়ি করে যেতে হবে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে বেশ কিছু আন্তনগর ও মেইল ট্রেন ছেড়ে যায়। আন্তনগর ট্রেনের মধ্যে রয়েছে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, মহানগর এক্সপ্রেস, তুর্ণা এক্সপ্রেস।
মেইল ট্রেন যেগুলো রয়েছে সেগুলোর ভড়া অনেক কম কিন্তু সময় বেশি লাগবে। ট্রেনে ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম যেতে শ্রেনী ভেদে ভাড়া পড়বে ৩২০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা।
আকাশ পথে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে বান্দরবান
ঢাকা থেকে আকাশ পথে বান্দরবানে যাওয়ার সরাসারি কোন ব্যবস্থা নাই সেক্ষেত্রে ট্রেনে করে যাওয়ার মতই চট্রগ্রাম নেমে আপনাকে বাসে অথাবা ব্যাক্তিগত/ভড়া গাড়িতে করে বান্দরবান যেতে হবে। আকাশ পথে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সহ বেসরকারী নভোএয়ার এবং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের নিয়মিত ফ্লাইট আছে।
আকাশপথে ভাড়া পড়বে সর্বনিম্ন ৩০০০ টকা থেকে ১০০০০ টাকা পর্যন্ত। দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে আকাশ পথে ভ্রমণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতেঃ অভ্যন্তরীণ রুটে বিমানের আসন ভাড়া ও বুকিং সংক্রান্ত তথ্য
চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান
চট্টগ্রাম থেকে বান্দবান যেতে হলে বহদ্দারহাট বাস স্টেশন থেকে প্রতি ঘন্টায় পূবালী ও পূর্বানী নামের দুটি বাস সাভির্স পাবেন। এ দুটি বাসে জনপ্রতি ভাড়া ৭০ টাকা। এছাড়াও বিআরটিসির এসি বাস চলাচল করে তিন বেলা ভাড়া পড়বে ১৫০ টাকা। তবে চট্টগ্রামের দামপাড়া বাস স্টপেজ থেকে বান্দরবান যাওয়া যায়।
পরিবার নিয়ে চট্রগ্রাম থেকে বান্দরবান যেতে কার অথবা মাইক্রোবাস ভাড়া পাবেন রেন্ট এ কার থেকে। মাইক্রোবাসের ভাড়া পড়বে ২,৫০০ টাকা থেকে ৩,৫০০ টাকা।
বান্দরবান থেকে থানচি
বান্দরবান থেকে থানচি বাসে কিংবা রিজার্ভ জীপে যেতে পারবেন। বান্দরবানের থানচি বাস স্ট্যান্ড থেকে এক ঘণ্টা পর পর লোকাল বাস থানচির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সময় লাগে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা এবং জনপ্রতি বাস ভাড়া ২০০ টাকা।
আবার জীপ অথবা চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করে যেতে পারবেন সেক্ষেত্রে খরচ পড়বে ৫,৫০০ টাকা থেকে ৬,০০০ টাকা, সময় লাগবে ৩ ঘন্টা ৩০ মিনিট। একটি জিপ রিজার্ভ করে একসাথে ১২ থেকে ১৪ জন অনায়াসে যাওয়া যায়। বান্দবান থেকে থানচি যেতে পথে পরবে মিলনছড়ি, চিম্বুক ও নীলগিরি।
থানচি থেকে রেমাক্রী
থানচি পৌঁছে প্রথমে একজন গাইড ঠিক করে নিন। উপজেলা প্রসাশন থেকে অনুমোদিত গাইড রয়েছে তাদের যে কোন একজনকে গাইড হিসেবে সাথে নিতে হবে। গাইড ছাড়া আপনি কোন ভাবে নাফাখুম ভ্রমণে করতে পারবেন না। যাওয়া এবং পরের দিন ফেরার ক্ষেত্রে গাইড ফি পড়বে ১৫০০ টাকা। এর পরে আপনাকে থানচি বিজিবি ক্যাম্প অথবা থানচি থানা থেকে নাফাখুম ভ্রমণের জন্য অনুমতি নিতে হবে।
সেক্ষেত্রে আপনার গাইড আপনাকে সাহায্য করবে। অনুমতি নিতে ভ্রমণকারী সকলের নাম, ঠিকানা, ফোন নাম্বার সহ কোথায় যাবে এবং কয়দিন থাকবে তা লিখে জমা দিতে হবে। একটি বিষয় মাথায় রাখবেন যে, বিকেল ৩ টার পরে থানচি থেকে রেমাক্রী যাবার জন্য অনুমতি পাবেন না তাই আপনাকে অবশ্যই দুইটার মধ্যে থানচি থাকতে হবে।
অনুমতি সংগ্রহ করে এবার থানচি ঘাট থেকে ছোট ইঞ্জিন নৌকা ভাড়া করে রওনা দিন রেমাক্রী বাজারের উদ্দেশ্যে। ৪ থেকে ৫ জন বসে যাওয়া যায় এমন সব নৌকা রিজার্ভ পাাওয়া যায় রেমাক্রী যাওয়া ও থানচি ফিরে আসার জন্য। সাধারণত এই নৌকাগুলোর ভাড়া পড়বে ৪,০০০ টাকা থেকে ৫,০০০ টাকা। সাঙ্গুতে পানি কম থাকলে একটু সময় বেশি লাগবে তবে সাধারণত সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘন্টার মত।
রেমাক্রী বাজারে যেতে যেতে পথে পরবে পদ্মমুখ, ভূ-স্বর্গ খ্যাত তিন্দু, রাজাপাথর, বড়পাথর এলাকা ও রেমাক্রি ফলস। নৌকায় চড়ে সাঙ্গু নদীর এই পথটুকু আপনার সারাজীবন মনে থাকবে আশা করি। উল্লেখ্য যে, গাইড এর যাওয়া, থাকা খাওয়া সহ অন্যান্য খরচ আপনাকে বহন করতে হবে।
রেমাক্রী থেকে নাফাখুম জলপ্রপাত
সাধারণত রেমাক্রী পৌছাতে বিকেল হয়ে যায় তাই যেদিন যাবেন সেইদিন আর নাফাখুম যাওয়া সম্ভব হবে না। রাতে রেমাক্রী বাজারে থেকে আপনাকে পরদিন সকালে আরও একজন স্থানীয় গাইড সাথে নিয়ে নাফাখুম যেতে হবে। স্থানীয় গাইড ভাড়া পড়বে ৫০০ টাকা এবং এটা আপনার থানচি থেকে নেওয়া গাইডই ঠিক করে নেবে।
রেমাক্রী খাল ধরে হাটা পথে নাফাখুম যেতে সাধারণত সময় লাগে ২ থেকে ৩ ঘন্টা, তবে আসলে সময় কত লাগবে তা নির্ভর করে আপনার হাটার গতি এবং কোন সময়ে যাচ্ছেন তার উপরে। যদি শীতের মৌসুমে যান সেক্ষেত্রে রেমাক্রী খালের পানি কম থাকায় সময় বেশি লাগবে না। আর বর্ষায় রেমাক্রী খালে পানি কিছু জায়গাতে অনেক বেশি থাকে।
কিছু জায়গায় খাল পার হতে হবে, পানি বেশি থাকলে এই পারাপারে সময় লেগে যায় বেশি। তবে দুঃচিন্তার কোন কারন নাই, এইসব জায়গায় সাহায্য করার জন্য আপনার গাইড থাকবে সবসময়। এই সকল এডভেঞ্চারের মধ্যে যেতে যেতে একসময় আপনার কানে আসবে নাফাখুম জলপ্রপাতের গর্জন।
নাফাখুম ভ্রমণে কোথায় থাকবেন
থানচি এবং রেমাক্রী দুই জায়গাতেই থাকার ব্যবস্থা আছে তবে আপনি চাইলে থানচিতে ভালো কোথাও থাকতে পারবেন। সেক্ষেত্রে বিজিবি নিয়ন্ত্রিত সীমান্ত অবকাশ কেন্দ্র রয়েছে। এখানে রুম ভাড়া পড়বে ১৫০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে। এছাড়া থানচি বাজার ও তার আশেপাশে কিছু কটেজ ও রেস্টহাউজ রয়েছে যেগুলোর মান অনুযায়ী জন প্রতি প্রতি দিনের ভাড়া পড়বে ২০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা।
রেমাক্রী বাজারে থাকার জন্য পাবেন আদিবাসীদের ঘর আর সাঙ্গু নদীর পাশে আদিবাসীদের তৈরি রেস্টহাউস। কয়েকজন মিলে এখানে থাকতে পারবেন জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ১৫০ টাকার কিছু কম বা বেশি।
নাফাখুম ভ্রমণে খাবেন কোথায়
মোটামুটি মানের বেশ কিছু খাওয়ার হোটেল আছে থানচি বাজারে এর মধ্যে কোন একটায় অনায়াসে খেয়ে নিতে পারেন। আর রেমাক্রীতে আদিবাসীদের বাড়িতে খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। ৮০ টাকার মধ্যেই খাওয়া সারতে পারবেন সাদা ভাত, ভর্তা, ভাজি ও ডিম দিয়ে। যদি মুরগি খেতে চান তবে খরচ করতে হবে জনপ্রতি ১২০ টাকা। রেমাক্রী পৌছেই আপনার গাইডকে দিয়ে জানিয়ে রাখুন কি খাবেন ও কতজন খাবেন।
সংক্ষিপ্ত ট্যুর প্ল্যান
যদি সবকিছু ঠিকঠাক সময়মত করতে পারেন তবে আপনাকে মাত্র এক রাত থাকতে হবে রেমাক্রি বাজারে। সেক্ষেত্রে যেখান থেকেই রওনা দেন না কেন সকালেই বান্দরবান পৌছাতে হবে। যদি ঢাকা থেকে বান্দরবান আসেন তবে রাত ৯টা থেকে ১০টার বাসে রওনা দিয়ে সকালে বান্দরবান পৌছাবেন। বান্দরবান কোন সময় সময় নষ্ট না করে লোকাল বাস বা জীপ রিজার্ভ করে চলে যান থানচি।
দুপুরের মধ্যেই অনুমতি ও অন্যান্য কাজ সেরে নৌকা রিজার্ভ করে পৌছে যাবেন রেমাক্রী বাজার। এখানে রাতে থেকে পরদিন খুব সকালে নাফাখুমের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যান। নাফাখুম জলপ্রপাত ঘুরে দুপুরের মধ্যে রেমাক্রী ফিরে দুপুরের খাবার সেরে ফেলুন।
এর পরে সময় নষ্ট না করে বিকেলের মধ্যে থানচি বাজার ফিরে বান্দবানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যান। আশা করি সন্ধ্যা বা তার কিছু পরে বান্দরবান পৌছে যেতে পারবেন। বান্দরবান থেকে কিছু খাওয়া দাওয়া সেরে রাতের বাসে রওনা হয়ে যান ঢাকা অথবা আপনার গন্তব্যে।
নাফাখুম ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় টিপস
- সাথে ভালো ও মজবুত দেখে ব্যাকপ্যাক নেবেন। হাতব্যাগ অথবা লাগেজ নিয়ে পাহাড়ে উঠতে পারবেন না।
- যতটা সম্ভব শুধুমাত্র দরকারী জিনিস ব্যাগে নিয়ে নিন। কারন পুরো ভ্রমণে আপনার নিজের ব্যাগ নিজের কাধে করে টানতে হবে।
- সঙ্গে সবসময় হালকা খাবার ও স্থায়ী ছোট পানির বোতল রাখুন।
- পাহাড়ে ট্রেকিং এবং পাহাড়ী নদীতে হাটার জন্য ভালো মজবুত স্যান্ডেল সাথে নিয়ে নিন। মাটিতে ভালো গ্রিপ করে, পিছলে যায় না এমন স্যান্ডেল নিতে চেষ্টা করুন।
- হাঁটার সময় হাতের কনুই এবং হাটুর সুরক্ষার জন্য আংলেট ও নি-ক্যাপ পড়বেন। রোদ থেকে বাচতে ক্যাপ পড়বেন।
- পাহাড়ে ট্রেকিং করতে পেশির উপর অনেক চাপ পরে। বান্দরবন যাওয়ার প্লান করলে বেশি করে কালা খান, কলাতে উপস্থিত পটাশিয়াম শরীরের পেশির জন্য খুব উপকারী।
- অনেকে স্যালাইন পান করেন, পাহাড়ে ট্রেকিং করতে এটা করবেন না, স্যালাইনের লবন আর চিনি আপনার শরীরে রক্তচাপ বাড়িয়ে ঘাম তৈরি করবে ফলে শরীরে পানি শূন্যতা সৃষ্টি হতে পারে।। তৃষ্ণা পেলে শুধুমাত্র পানি পান করুন তবে পরিমানে খুবই কম। শুধুমাত্র গলা ভিজিয়ে নিন এতে আপনার তৃষ্ণা মিটবে তবে শরীর ভারি হবে না।
- পাহাড়ে প্রচুর মশার উৎপাত, অবশ্যই সাথে ওডোমস লোশন নিয়ে রাখুন।
- পাহাড়ে ইলেকট্রিসিটি নেই তাই চার্জের ব্যবস্থাও পাবেন না। সাথে করে টর্চ নেবেন এবং শুধুমাত্র প্রয়োজনে ব্যবহার করবেন।
- দয়া করে সাথে অলস কাউকে নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। খুব সকালে উঠুন এবং ট্রেকিং শুরু করুন। দেরি করে শুরু করলে রোদে খামাখা কষ্ট পাবেন।
- পাহাড়ী নদীতে জোঁক থাকে, শরীরে লাগলে অযথা চেঁচামেচি করবেন না এতে এনার্জি নষ্ঠ হবে। সাথে লবন রাখুন জোঁক ছাড়াতে কাজে দেবে।
- সবসময় দলবদ্ধ ভাবে হাটার চেষ্টা করুন। দল বড় হলে দুটো গ্রুপে ভাগ হয়ে যান।
- ছাতা এবং রেইনকোট সাথে রাখতে পারেন যদি আপনার বহন করতে কষ্ট না হয়।
- সম্ভব হলে ব্যাকপ্যাক কাভার নিবেন আর যদি সম্ভব না হয় তবে সকল জিনিস বড় পলিথিনে ভরে এয়ারটাইট করে তারপর ব্যাকপ্যাকে ভরবেন।
- ফার্ষ্ট এইড সাথে রাখুন। যেমন জ্বর, পেই কিলার, আমাশয় ও গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ, খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ইত্যাদি।
- সাথে করে নিয়ে যাওয়া চিপস বা বিস্কিটের প্যাকেট যেখানে সেখানে ফেলবেন না, প্রয়োজনে সাথেই রাখুন পরে নিদিৃষ্ট স্থানে ফেলে দেওার জন্য।
ভ্রমণ সংক্রান্ত আরো লেখাঃ
সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ! যেখানে মেঘের ফাঁকে পহাড় দেখে আকাশকে!
ঘুরে আসুন দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন!
তথ্য ও ছবিঃ Travelers of Dhaka