ই-কমার্স বা ডিজিটাল বানিজ্য আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্যের বিপনণকে অনেক সাশ্রয়ী ও ঝামেলামুক্ত করেছে। তবে এই ঝামেলামুক্ত বিপনণের পিছনে রয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ন কাজ তার মধ্যে একটি হচ্ছে ভোক্তার কাছে প্রডাক্ট আকর্ষণীয় করে উপস্থান করা। আপনার প্রডাক্ট যত বেশি অর্কষনীয় করে ক্রেতাদের কাছে উপস্থাপন করতে পারবেন, ক্রেতাদের কাছে থেকে ততবেশি সড়া পাবেন। এক্ষেত্রে প্রয়োজন ভাল মানের ছবি আর ভাল মানের ছবির জন্য প্রয়োজন প্রফেশনাল প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি DSLR ক্যামেরা।
প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি করতে ভাল পারফরম্যান্সের জন্য ভাল একটি DSLR ক্যামেরা ও ক্যামেরা কনফিগারেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে খুব দামী ক্যামেরা কেনা গুরুত্বপূর্ণ নয়, সব ক্যামেরা দিয়েই ফটোগ্রাফী সম্ভব তবে প্রডাক্ট ফটোগ্রাফী করতে পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন প্রযুক্তিগত কনফিগারেশন প্রয়োজন। সাধারণত চার দেয়ালের মাঝে কৃত্রিম লাইট, ভিন্ন ভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ড সহ ছোট সেটআপ দিয়ে প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফি কারা হয়। তাই এই সেটআপগুলির সাথে সামঞ্জস্য করতে নির্দিষ্ট কনফিগারেশনের প্রফেশনাল DSLR ক্যামেরা প্রয়োজন হয়।
প্রফেশনাল প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি করতে ৫টি ভাল DSLR ক্যামেরা
আপনি প্রডাক্ট ফটোগ্রাফির জন্য যেমন ক্যামেরা আশা করছেন ঠিক তেমনই কিছু ভাল ক্যামেরার তালিকা এখানে উল্লেখ করা হয়েছে যা পারফরম্যান্স ও ফটোগ্রাফীর মানের উপর নির্ভর করে তালিকাতে স্থান পেয়েছে
১. Fujifilm X-T2 – প্রফেশনাল প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি ক্যামেরা
Fujifilm X-T2 একটি মিররলেস (Mirrorless) ডিজিটাল ক্যামেরা। প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি করতে আপনার যা প্রয়োজন তার সবকিছুই রয়েছে এই ক্যামেরাটিতে। ক্যামেরাটির হাইলি র্যান্ডম পিক্সেল অ্যারে এর অপটিক্যাল লো-পাস ফিল্টার ব্যবহার না করে moiré এবং ফলস রঙগুলিকে কমিয়ে দিতে সক্ষম। এর এক্স-প্রসেসর প্রো-ইমেজ প্রসেসিং ইঞ্জিনটি অনেক দ্রুত গতির। গ্রেন ইফেক্ট ফাংশন সবধরনের ফিল্ম সিমুলেশন মোডের সাথে একত্রিত হয়ে টেকচার এড করে একটি ভাল ক্রিয়েটিভ আউটপুট দিতে সক্ষম।
Fujifilm X-T2 এর ফোকাস লিভারঃ উপরে / নীচে, ডান / বাম এবং তির্যকভাব সহ আটটি দিক দিয়ে ফোকাস অঞ্চল পরিবর্তন করা যায়। ক্যামেরাটির বডি ম্যাগনেসিয়াম অ্যালই দিয়ে তৈরি। Fujifilm X-T2 -এর ডেটা স্টোরেজের জন্য দুটি এসডি কার্ড ব্যবহারের জন্য দুটি মেমোরী কার্ড স্লট রয়েছে।
Fujifilm X-T2 -তে রয়েছে একটি প্রিমিয়াম এলসিডি স্ক্রিন যা তিন দিকে ঘোরনো যায়। ল্যান্ডস্কেপ শ্যুটিং করার সময় এটি উপরে এবং নীচে ঘোরতে হয় এবং প্রতিকৃতিতে শ্যুটিং করার সময় উপরের দিকে কাত করে শুটিং করতে হয়। ক্যামেরাটির শার্টার ডিলে টাইম কম হওয়াতে দ্রুত রেসপন্স এর মাধ্যমে এটি উচ্চমানের ছবি দিতে সক্ষম।
Fujifilm X-T2 ক্যামেরাটির সুবিধা ও অসুবিধাঃ
সুবিধা | অসুবিধা |
ধুলা এবং আর্দ্রতা প্রতিরোধী বডি | 30 মিনিটের বেশি রেকর্ড করা যায় না |
হালকা ও শক্তিশালী বডি | ব্যাটারির জীবন খুব বেশি দীর্ঘ নয় |
উচ্চ গতি এবং অবিরাম শুটিং, হাই প্রিসিসন AF ট্র্যাকিং, অত্যন্ত দ্রুত লাইভ | |
১৫টি মোড | |
ট্র্যাকিং সেনসিভিটি | |
জোন এরিয়া স্যুইচিং |
২. Sony Alpha a6000 – প্রফেশনাল প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি ক্যামেরা
Sony Alpha a6000 মিররলেস ডিজিটাল ক্যামেরাটি AF (Auto Focus) ট্র্যাকিংয়ের সাথে ওয়াইড এরিয়া 179-পয়েন্টের ফেজ-ডিটেকশন সেন্সররের মাধ্যমে সেকেন্ডে 11fps ফ্রেম ক্যাপচার করতে পারে যা প্রডাক্ট ফটোগাফি ছাড়াও ভিভিন্ন ইভেন্ট কাভার করার জন্য অসাধারণ একটি ডিভাইস। ক্যামেরাটিতে রয়েছে উচ্চতর রেজোলিউশন এবং ছবির গুণগতমান এবং সেনসিভিটির জন্য কাঠামোতে রয়েছে α7R গ্যাপলেস অন-চিপ লেন্স। ক্যামেরাটি ন্যচারাল ডিটেইলস, সমৃদ্ধ টোনাল গ্রেডেশনস, কম শব্দ সহকারে অনেক বেশি বাস্তব চিত্র ও ভিডিও নিতে সক্ষম।
পরিবর্তনযোগ্য লেন্স এবং ই-মাউন্ট সিস্টেম বাজারের অন্য যে কোন ক্যামেরার তুলনায় α6000 ক্যামেরাটিকে আরও বহুমুখী করেছে। ক্যামেরাটিতে সাতটি কাস্টমাইজেবল বোতাম রয়েছে, যার সাহায্যে ৪৭৪টির মধ্যে থেকে যে কোন ফাংশন নির্ধারণ করা যায়। OLED EVF ফিচারে চারটি ডাবল অ্যাফেরিকাল লেন্স সহ একটি নতুন অপটিকাল সিস্টেম রয়েছে যা ওয়াইড ভিউতে ১০০% ফ্রেম কভারেজ দেয় এবং ওয়াইড ভিউ এঙ্গেলে (প্রায় 33 °) কোণ থেকে কোণে পরিষ্কাার দেখতে সাহায্য করে।
Sony Alpha a6000 -ক্যামেরাটির সুবিধা ও অসুবিধাঃ
সুবিধা | অসুবিধা |
৩ মেগাপিক্সেল ডিটেইল এবং বিশ্বের দ্রুততম অটো ফোকাস | দুর্বল ব্যাটারি লাইফ |
প্রতি সেকেন্ডে ১১ টি ছবি তুলতে সক্ষম | দুর্বল ক্যামেরার গ্রিপ দরিদ্র |
এটি কমপ্যাক্ট এবং ব্যবহার করা সহজ | |
ফ্লাইং অবস্থায় সেটিংস পরিবর্তনের জন্য দুটি দ্রুত অ্যাক্সেস ডায়াল | |
২৪ মেগাপিক্সেল এপিএস-সি সেন্সর সহ অত্যাশ্চর্য উচ্চ রেজোলিউশনের ক্যাপচার লাইফ | |
BIONZ X প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে চমৎকার ছবি |
৩. Nikon D7200 – প্রফেশনাল প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি ক্যামেরা
Nikon D7200 একটি জনপ্রিয় নাম, এই ক্যামেরাটিতে রয়েছে বিল্ট-ইন ওয়াই-ফাই ফিল্ড কমিউনিকেশন সিস্টেম যার মাধ্যমে আপনার ক্রিয়েটিভ ভিশন শেয়ার করতে পারবেন যে কোন সময়। ক্যামেরাটিতে ওঠানো ছবি খুবই সুক্ষ ও স্পষ্ট আর ধারণকৃত ভিডিও একেবারে জীবন্ত যা আপনার ক্রিয়েটিভিটিকে আরো বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম। একাধারে ভোর থেকে সন্ধ্যা অবধি যে কোনও আলোতে শ্যুট করতে পারেন যে কোন ইভেন্ট। এই ডিভাইসটি সবসময় আপনাকে পিওর ও সুক্ষ ফটো এবং ভিডিওর নিশ্চয়তা দেবে।
এর ২৪.২ মেগাপিক্সেল DX ফরম্যাট CMOS ইমেজ সেন্সর ও EXPEED 4 ইমেজ প্রসেসিং ইউনিট যা NIKKOR লেন্সের সাথে ছবির ডিটেল টোনালিটি বাড়ানোর জন্য একসাথে কাজ করে। ISO 25,600 ছবির সর্বোচ্চ মান নিয়ন্ত্রণ করে কম আলোতে চমৎকার কাজ করে। এতে রয়েছে সহজে ফটো ব্রাউজ করার সুবিধা যেখানে সহজে ক্যাপচার করা ফটো বা ভিডিও অনলাইনে পোস্ট বা শেয়ার করতে পারবেন। আপনার স্মার্ট ডিভাইসটি D7200 এর রিমোট হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন। এক কথায় বলা যায় প্রফেশনাল প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি সহ অন্যান্য যে কোন প্রয়োজনে এটি নিশ্চিন্তে ব্যাবহার করতে পারেন।
Nikon D7200 -ক্যামেরাটির সুবিধা ও অসুবিধাঃ
সুবিধা | অসুবিধা |
AF সিস্টেম (সাথে AF সংযোগ এবং যোগাযোগ) | কম আলোতে কার্য ক্ষমতা কম |
কোনও অপটিক্যাল লো-পাস ফিল্টার নেই (OLPF) | কিছুটা জটিল |
৫১ পয়েন্ট অটোফোকাস সিস্টেম | একটু ভারী |
প্রতি সেকেন্ডে ৬ ফ্রেম (fps) শুটিংয়ের ক্ষমতা বিল্টইন ওয়াই-ফাই এবং ফিল্ড কমুনিকেশন (NFC) |
৪. Canon EOS REBEL T7i – প্রফেশনাল প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি ক্যামেরা
Canon EOS REBEL T7i ক্যামেরাটি ফিল্ম তৈরি বা ভিডিও ব্লগের জন্য পারফেক্ট একটি ডিভাইস। আকারে অনেক ছোট হওয়াতে এর হালকা ওজন এবং সহজ ব্যবহার আপনার ভাল লাগবে। যারা নতুন এবং মধ্যম পর্যায়ের ব্যাবহারকারী তাদের জন্য এটি একটি দুর্দান্ত জিনিস। ডিভাইসটির বোতামগুলি সব ঠিক সেখানেই যেখানে আপনি চান ফলে খুজে পেতে সমস্যা হবেনা।
বিল্টইন ওয়াই ফাই, NFC এবং ব্লুটুথ। ব্যাবহৃত লেন্সঃ EF S 18 55 মিলিমিটার f/4 56 IS STM (55 মিলিমিটারের ফোকাল লেন্থ)। এটি সহজে ব্যবহারযোগ্য এবং প্রফেশনাল ফিচার সমৃদ্ধ চমৎকার একটি প্যাকেজে। ৪৫-পয়েন্টের সমস্ত ক্রস-টাইপ অপটিক্যাল ভিউফাইন্ডার AF সিস্টেম, ফেইস ডিটেকশন সহ ডুয়াল পিক্সেল CMOS AF, ক্যাননের কিংবদন্তি মানের চিত্র, এছাড়া আরও অনেক কিছু।
ক্যামেরাটি ঘুরিয়ে এটির পিছনের এলসিডি স্ক্রিনটি দেখুন। Canon EOS REBEL T7i ডিভাইসটির সাথে একটি দুর্দান্ত টাচ স্ক্রিন রেয়ার এলসিডি রয়েছে, যেখানে আপনি আপনার আঙ্গুল ব্যবহার করে দ্রুত ফাংশন পরিবর্তন করতে পারববেন। অনেকটা আপনার স্মার্টফোনের মত করেই সহজে সেটিংস পরিবর্তন করতে পারেবেন। যে কোন ইভেন্ট কাভার সহ প্রডাক্ট রিভিউ, বিজ্ঞাপন তৈরির কাজে এই ক্যামেরাটির পারফরমেন্ট চমৎকার।
Canon EOS REBEL T7i -ক্যামেরাটির সুবিধা ও অসুবিধাঃ
সুবিধা | অসুবিধা |
২৪.২ মেগাপিক্সেল CMOS (APS C) সেন্সর | ব্লুটুথ শুধুমাত্র ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণের জন্য, অর্থাৎ ছবি ব্লুটুথের মাধ্যমে স্থানান্তর করা যায় না। |
বিল্টইন ওয়াই ফাই, NFC এবং ব্লুটুথ লেন্স | এই ক্যামেরাগুলিতে কোনও হেডফোন জ্যাক নেই |
হাই স্পিড অবিরাম শুটিং | |
৪৫-পয়েন্ট সমস্ত ক্রস-টাইপ অপটিক্যাল ভিউফাইন্ডার AF সিস্টেম বিভিন্ন ধরণের লেন্স |
৫. Panasonic Lumix ZS70 / TZ90 – প্রফেশনাল প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি ক্যামেরা
শক্তিশালী LUMIX ZS70 ক্যামেরা আপনার ভ্রমণের সমস্ত দর্শনীয় স্থান, দৃশ্য এবং আবেগকে ক্যাপচার করতে সাহায্য করবে। এই পকেট-আকারের ক্যামেরাটি ফটো এবং ভিডিওগুলিতে যাবতীয় রঙ এবং ডিটেইল সহ কাজ করে, যেভাবে আমরা সমস্ত কিছু স্মরণ করে রাখি। LUMIX ZS70 আপনার প্রতিটি ইভেন্ট 3840 x2160p ডিটেইল রেজুলেশনে রেকর্ড করতে পারে যা চার গুন হাই ডেফিনেশন সমৃদ্ধ।
LUMIX ZS70 ক্যামেরাটি দিয়ে খুব দ্রুত আপনি ইভেন্ট কাভার সহ প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি কাজেও ব্যবহার করতে পারবেন। এটির 24 মিমি LEICA DC VARIO-ELMAR ইনক্লুডিং 30x অপটিক্যাল জুম (35mm camera equivalent: 24-720mm) আপনার আগ্রহহের সবকিছুকে আপনার কাছে নিয়ে আসবে। ক্যামেরার কন্ট্রোল রিং অ্যাপারচার আপনাকে শাটারের গতি, জুম এবং ফোকাস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে। যার ফলে আপনার পছন্দসই সেটিংসটি সহজেই কাস্টমাইজ করতে পারবেন।
কখনও কখনও সূর্যের আলোতে ক্যামেরা স্ক্রীনগুলি দেখতে অসুবিধা হয়, LUMIX ZS70 এর 0.2-ইঞ্চি 1,166k-dot LVF (Live View Finder) যা নিজের চোখের দিকে ক্যামেরা তুললে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় হয়ে যায়, ফলে আপনি ক্যামেরা ডিসপ্লের প্রতিটি বিবরণ দেখে আপনার প্রয়োজনীয় শটটি ক্যাপচার করতে পারেন।
LUMIX ZS70 -ক্যামেরাটির সুবিধা ও অসুবিধাঃ
সুবিধা | অসুবিধা |
স্ট্যাকিং ফোকাস | বাহ্যিক কোনও ব্যাটারি চার্জিং স্টেশন নেই |
180 ডিগ্রি ঝুঁকতে সক্ষম মনিটর | ডেডিকেটেড ভিউফাইন্ডারটি ছোট |
একটি ২০.৩ মেগাপিক্সেল, উচ্চ সংবেদনশীল MOS সেন্সর | |
৫-এক্সিস অপটিকাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন | |
আই ভিউফাইন্ডার |
প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি ক্যামেরা কেনার আগে বিবেচ্য বিষয়ঃ
ই-কমার্স / অনলাইন শপের জন্য বা পেশাদার ফটোগ্রাফার হিসাবে আপনি যখন প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি করার সিন্ধান্ত নিয়েছেন এবং ক্যামেরা কিনতে চাচ্ছেন তখন আপনার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করা উচিত।
প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি জন্য ম্যানুয়াল সেটিংস
পেশাদার ফটোগ্রাফির তুলনায় প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফিতে কাস্টমাইজেশন বেশি প্রয়োজন পড়ে। যদিও প্রতিটি DSLR ক্যামেরায় অটো সেটিংস রয়েছে, তবে পেশাদার ফটোগ্রাফাররা আরও ভাল শট পেতে ক্যামেরার ম্যানুয়াল সেটিংস ব্যাবহার করে কাষ্টমাইজ শট নিতে পছন্দ করেন। আলো, স্থান এবং প্রডাক্টের ক্যাটাগরি বিবেচনা করে প্রতিটি ফটোগ্রাফারের নিজস্ব ফটোগ্রাফি স্টাইল থাকে।
আর তাই তাদের প্রয়োজন অনুসারে ক্যামেরাকে কনফিগার করে ব্যবহার করেন। সুতরাং আপনাকে অবশ্যই ম্যানুয়াল মুডযুক্ত একটি ক্যামেরা কিনতে হবে। আপনি যদি শিক্ষানবিস হন হয়তো এটি আপনাকে প্রাথমিক অবস্থায় কনফিউজ করবে তবে একটু সময় দিলে ক্যামেরার সাথে প্রদত্ত গাইডলাইন আপনাকে ক্যামেরা মোডের সাথে সামঞ্জস্য করতে সহায়তা করবে।
আপনি আলো স্বল্পতা, ফোকাস শিফটিং, মোশন ব্লার, রিফ্লেকশন ছাড়াও আরো কিছু সমস্যার মুখোমুখি হবেন যার সমাধান করতে হলে আইএসও, শাটার গতি, অ্যাপারচার, ফোকাস অপশনসহ আরও অনেকগুলি সেটিংসের সাহায্য নিয়ে সামঞ্জস্য করতে হবে যা শুধুমাত্র ম্যানুয়ালি ক্যামেরা কনফিগারেশনের মাধ্যমে সম্ভব।
প্রডাক্টের ফটোগ্রাফিতে নির্ভুল প্রাকৃতিক রঙ পাওয়ার জন্য ক্যামেরায় হোয়াইট ব্যালেন্স হ’ল আরেকটি প্রাথমিক বৈশিষ্ট্য যা আপনাকে ম্যনুয়ালি সেট করে নিতে হবে, সুতরাং আপনি ম্যান্যুয়াল সেটিংসের মাধ্যমে প্রডাক্টের সঠিক রঙ এবং সঠিক বিবরণ পাবেন।
প্রডাক্ট ফটোগ্রাফির জন্য প্রয়োজন পরিবর্তনযোগ্য লেন্স
পেশাদার এবং খ্যাতিমান ফটোগ্রাফাররা প্রতিটি বিভিন্ন শটের জন্য বিভিন্ন লেন্স ব্যবহার করেন। কারন এক একটি প্রডাক্টের বৈশিষ্ঠ ভিন্ন ভিন্ন আর তাই প্রতিটি আলাদা প্রাডক্টের সঠিক ছবিটি ধারণ করতে আলাদা ধরণের লেন্সের প্রয়োজন হয়। সুতরাং ই-কমার্সের জন্য প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি করতে পরিবর্তনযোগ্য লেন্সের সাথে ডিএসএলআর ক্যামেরা প্রয়োজন যা সঠিক ছবিটি পেতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই কখনও অপসারণযোগ্য বা পরিবর্তনযোগ্য লেন্স ছাড়াই প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি ক্যামেরা কেনার কথা ভাবেন না।
প্রডাক্ট ফটোগ্রাফির জন্য মেগাপিক্সেল
আমরা আপনাকে সর্বোচ্চ মেগাপিক্সেল সহ ক্যামেরা কেনার পরামর্শ দিই। বেশি মেগাপিক্সেল আপনাকে আরও বিস্তারিত চিত্র দেবে যা আপনাকে চিত্রের গুণমান ঠিক রেখে এডিট করার স্বাধীনতা দেবে। বেশি মেগাপিক্সেল আপনাকে প্রপার্টিজ ঠিক রেখে ছবি ক্রপ করতে দেয়। তাছাড়া প্রডাক্টের ছবি প্রিন্ট করতে হলেও বড় আকারে এবং উচ্চ মানের ছবি প্রয়োজন। আপনার ক্যামেরায় সর্বোচ্চ মেগাপিক্সেল থাকলে আপনার ক্লায়েন্ট বেশি সুখী হবে।
প্রফেশনাল ফটোগ্রাফির জন্য সেন্সর
আপনার DSLR ক্যামেরা সেন্সরটি আপনার ক্যাপচার করা ফটোগ্রাফির মান নির্ধারণ করে। এটি আলো গ্রহণ করে এবং পিক্সেলসহ ফটো তৈরি করে। হাই সেনসিভিটি সেন্সর কম আলোতেও ভাল ছবি তুলতে সক্ষম। সুতরাং হাই সেনসিভিটি সেন্সর সহ একটি ক্যামেরা নির্বাচন করার জন্য পরামর্শ থাকবে।
কম আলোতে সক্ষমতা (Low Light Performance)
একজন পেশাদার ফটোগ্রাফার হিসাবে আপনাকে ইনডোর এবং আউটডোর উভয় স্থানেই ফটোশুট করার জন্য সক্ষম হতে হবে। এর অর্থ আপনি সবসময় আপনার পছন্দ মতো সঠিক বা পর্যাপ্ত আলো পাবেন না। সুতরাং আপনি যে ক্যামেরাটির সন্ধান করছেন তা হালকা বা কম আলো পরিস্থিতিতে সঠিক ছবি তুলতে সক্ষম হওয়া উচিত। প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি করার জন্য আমাদের সুপারিশ থাকবে ক্যামেরা নির্বাচন করার ক্ষেত্রে সেটাই নির্বাচন করুন যেটার ISO level অনেক বেশি। ISO level কম আলোতে কাংখিত ছবি পেতে সাহায্য করে।
দ্রুত প্রডাক্ট ফটোগ্রাফির জন্য অটোফোকাস
ফটোগ্রাফাররা সাধারণত প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি করার সময় ম্যানুয়াল ফোকাস পছন্দ করেন। তবে আপনি যখন আপনার ক্লায়েন্টের জন্য কাজ করছেন এবং কাজ শেষ করার জন্য পর্যাপ্ত সময় হাতে নাই তখন আপনাকে অটোফোকাসের উপর নির্ভর করতে হবে। কিছু ক্লায়েন্ট আপনাকে পর্যাপ্ত সময় দেবে না এটাই স্বভাবিক কিন্তু আপনাকে অবশ্যই সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করতে হবে। তাই ক্যামেরা নির্বাচনের ক্ষেত্রে অটোফোকাস অপশনটি অবশ্যই বিবেচনায় রাখুন।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রডাক্ট ফটোগ্রাফি
প্রতিষ্ঠিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে একটু দৃষ্টি দিলে হয়তো বুঝতে পারবেন যে প্রডাক্ট ফটোগ্রাফির গুরুত্ব কতটুকু। অনলাইনে যখন আপনার প্রডাক্ট ডিসপ্লে করছেন তখন আপনার প্রডাক্টটিকে সবগুলো দৃষ্টিকোন থেকে ভোক্তার কাছে তুলে ধারতে হবে, কারন অনলাইনে শুধুমাত্র ছবি এবং প্রদত্ত বিবরণ ছাড়া প্রডাক্ট যাচই করার কোন উপায় নেই। বর্তমানে কিছু প্রতিষ্ঠান প্রফেশনাল প্রডাক্ট ফটোগ্রাফিতে গুরুত্ব দিচ্ছে এবং তাদের ব্রান্ড ভ্যালু থেকে শুরু করে সেল ভলিউমও বাড়ছে।
বাংলাদেশে কোথায় পাবেন ভাল DSLR ক্যামেরা?
একটা সময় ছিলো যখন বাংলাদেশে হাতে গোনা দু একটি প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল ক্যামরার পরিবেশক ছিলো, তাও ছিলনা তাদের কোন ওয়েবসাইট। তবে সময় পাল্টেছে, অনেক প্রতিষ্ঠানই এখন ব্রান্ড DSLR ক্যামেরা আমদানি করছেন এবং শোরুমের সাথে সাথে অনলাইনেও ক্যামরো বিক্রি ও প্রদর্শনের সুবিধা রেখেছে। তবে DSLR ক্যামেরা কেনার আগে অবশ্যই যে ক্যামেরা কিনবেন সেটার সম্পর্কে অনলাইন থেকে সেলার রিভিউ, প্রডাক্ট রিভিউ, ইন্টারন্যাশনাল ওয়ারেন্টি, রিফান্ড ও রিটার্ন পলিসিগুলো দেখে নেবেন।
অনলাইনে পন্য কিনতে যা যা জানা প্রয়োজন তা এখান থেকে দেখে নিনঃ অনলাইন শপিং; যে বিষয়গুলো জানা জরুরী।
অনলাইনে কোথায় পাবেন DSLR ক্যামরা
অনলাইনে মোটামুটি সব বড় মার্কেটপ্লেস এবং ইকমার্স সাইটে প্রফেশনার DSLR ক্যামেরা ছাড়াও সাধারণ ব্যবহারের জন্যও DSLR ক্যামেরা পাবেন। অনলাইনে যে সকল মার্কেটপ্লেস ও ইকমার্স সাইট থেকে নিশ্চিন্তে DSLR ক্যামেরা কিনতে পারবেন তার তালিকাঃ
Bdstall
মোবইল: +(88) 01612378255
ই-মেইল: [email protected]
সাড়া বাংলাদেশ থেকে অর্ডার করে পণ্য নিতে পারবেন।
pickaboo
মোবইল: +8809666745745
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানাঃ বাসা নং- ১০, রোড নং- ১২, ব্লক F, নিকেতন, গুলশান ০১, ঢাকা ১২১২।
Nextgear
মোবইল: +(88) 096 1717 1245; 017 1743 3752
ই-মেইল: [email protected]; [email protected]
ঠিকানাঃ ১০৮ কাজি নজরুল ইসলাম এভিনিউ, বাংলামটর, ঢাকা।
Startech
হটলাইন: 09678002003
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানাঃ ঢাকা সহ সারা বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি ব্রাঞ্চ রয়েছে কম্পানিটির।
Flora Limited
ফোন: +880-2-9567846; +880-2-9587255 -59,
ই-মেইল: [email protected]
Globalbrand
হটলাইন: +88-09666774422 , +88-01729200300
ই-মেইল: [email protected]
ঠিকানাঃ 19/2 পশ্চিম পান্থপথ, ধানমন্ডি, ঢাকা ১২০৫।
এছাড়াও বাংলাদেশের প্রথম সারির মার্কেটপ্লেস Daraz, Evaly., Ajkerdeal -এ পাবেন ভাল মানের ব্রান্ডেড DSLR ক্যামেরা। তবে এখান থেকে কেনার আগে অবশ্যই সেলার রিভিউ ভাল করে দেখে তার পরে অর্ডার করবেন। আর অর্ডার করার আগে
অফলাইনে বা যে সকল মার্কেটে পাবেন DSLR ক্যামরা
শোরুম থেকে DSLR ক্যামরা কিনতে হলে আপনাকে যেতে হবে আইডিবি ভবন, বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স, যমুনা ফিউচার পার্ক শপিং কমপ্লেক্স, স্টেডিয়াম মার্কেট, মাল্টিপ্লান শপিং কমপ্লেক্স এর মত জায়গা গুলোতে।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশে ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার ও ড্রোন উড্ডয়ণ নীতিমালা!