ADVERTISEMENT
মুক্তপ্রান
  • মূল পাতা
  • লাইফস্টাইল
  • ভ্রমণ
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • স্বাস্থ্য কথা
  • ইতিহাস
  • রহস্য
  • রিভিউ
  • বৈশ্বিক
  • পরামর্শ
No Result
View All Result
মুক্তপ্রান
  • মূল পাতা
  • লাইফস্টাইল
  • ভ্রমণ
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • স্বাস্থ্য কথা
  • ইতিহাস
  • রহস্য
  • রিভিউ
  • বৈশ্বিক
  • পরামর্শ
No Result
View All Result
মুক্তপ্রান
No Result
View All Result

আবিষ্কারের কাহিনী-কৃত্রিম হার্ট ভাল্ব

Rezwanul Hoque Bulbul by Rezwanul Hoque Bulbul
September 5, 2020
in বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য কথা
A A
1
কৃত্রিম হার্ট ভাল্ভ আবিষ্কারের ইতিহাস
4
SHARES
37
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

শুরুর কথা

উনবিংশ শতাব্দীতে অনেক বিখ্যাত সার্জনের নিষেধ অমান্য করে কিছু দুঃসাহসী সার্জন হার্টের অস্ত্রপ্রচার শুরু করেন, এ ব্যাপারে লুদভিগ রেন, (Ludwig Rehn) এর নাম অগ্রগণ্য, কারন তিনি সেই ১৮৯৬ সালেই হার্টের গায়ের ক্ষত সেলাই করে সারিয়ে তোলেন। হার্ট-লাং মেশিন আবিষ্কারের আগে মূলত সরু হয়ে যাওয়া হার্ট ভাল্ব হার্টকে চালু রেখেই আঙ্গুলের সাহায্যে প্রসারিত করা হত।

১৯১৩ সালে টাফিয়ার (Théodore Tuffier) প্রথম এওরটিক (Aortic) ভাল্ভ এবং ১৯২৫ সালে স্যুটার (Suttar) প্রথম মাইট্রাল (Mitral) ভাল্ভ এভাবেই প্রসারিত করেন। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, হার্টে মূলত চার ধরনের ভাল্ভ রয়েছে-

  • এওরটিক (Aortic)
  • মাইট্রাল (Mitral)
  • ট্রাইকাস্পিড (Tricuspid) এবং
  • পালমোনারী (Pulmonary) ভাল্ব

পরবর্তীতে সব ধরনের ভাল্বের উপরেই অস্ত্রপ্রচার করা হয়েছে। ভাল্বের কাজ হল রক্তপ্রবাহের গতিকে একমূখী করা, ভাল্ব সরু হয়ে গেলে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়, আবার ভাল্ব মোটা বা অকার্যকর হয়ে গেলে রক্ত উল্টাদিকে প্রবাহিত হয়। সরু ভাল্ব আঙ্গুল বা যন্ত্রের সাহায্যে মোটা করা গেলেও যে ভাল্ব অকার্যকর হয়ে গেছে তাকে প্রতিস্থাপন করা ছাড়া কোন গত্যান্তর থাকে না।

হার্ট-লাং মেশিন এমন একটি যন্ত্র যার মাধ্যমে সাময়িকভাবে হার্ট এবং লাংসের কাজ বন্ধ রেখে হার্টের অভ্যন্তরের ত্রুটি বিচ্যুতি সারিয়ে তোলার পর পুনরায় হার্ট এবং লাংসের কাজ ফিরিয়ে আনা যায়।

রোগ নির্ণয়ে মেডিকেল ইমেজিং সম্পর্কে জানতে পড়ুন

পর্যায়ক্রমে আবিষ্কারের কাহিনী- কৃত্রিম হার্ট ভাল্ব

  • হাফনাগেল (Charles A. Hufnagel) ১৯৫২ সালেই মুল ধমনীর (Descending Aorta) ভিতর কৃত্রিম ভাল্ব (Ball & cage valve) লাগিয়ে দেন। এতে শরীরের নীচের অংশে রক্ত সরবরাহ নিশ্চিত হলেও, উপরের অংশে ত্রুটিপুর্নই থেকে যায়। এটা করা ছাড়া উপায়ও ছিলনা, কারন ১৯৫৪ সালের আগে সফলভাবে হার্ট-লাংস মেশিন ব্যবহার করে হার্টের অভ্যন্তরের ত্রুটি সারিয়ে তোলা সম্ভব হয়নি। 
  • ১৯৬০ সালেই হার্কেন (Harken), স্টার (Starr) যথাক্রমে এওরটিক এবং মাইট্রাল (Mitral) ভাল্ব কৃত্রিম বল ও কেজ (Ball & cage valve) ভাল্বে সাহায্যে প্রতিস্থাপিত করেন।
  • ১৯৬২ সালে হেইম্বেকার (Heimbecher) প্রথম মৃত মানুষ থেকে সংগৃহীত ভাল্ব (Homograft) মাইট্রাল ভাল্ব প্রতিস্থাপনের কাজে লাগান।
  • ১৯৬৭ সালে রস (Ross) রোগীর নিজের পালমোনারী ভাল্ব কেটে এওরটিক পজিশনে বসান, এবং পালমোনারী পজিশনে হোমোগ্রাফট বসিয়ে দেন।
  • ১৯৭১ সালে কার্পেন্তিয়ার (Carpentier ) শুকরের ভাল্ব দিয়ে মানুষের ক্ষতিগ্রস্ত ভাল্ব প্রতিস্থাপন করেন (Xenograft) এবং
  • ১৯৮৩ সালেই এই বিশ্ববিখ্যাত সার্জন এবং বৈজ্ঞানিক মাইট্রাল ভাল্ব যথাযথভাবে মেরামত করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেন।

আঙ্গুল দিয়ে সরু হয়ে যাওয়া ভাল্ব প্রসারিত করার পদ্ধতি অচল হয়ে গেলেও, এখন বেলুনের মাধ্যমে ভাল্ব প্রসারনের কাজ নতুনভাবে চালু হয়েছে এবং এই পদ্ধতি ক্রমশই উন্নতি লাভ করছে। ক্যাথেটারের মাধ্যমে ভাল্ব প্রসারণ ছাড়াও উপযুক্ত ক্ষেত্রে ভাল্ব প্রতিস্থাপন, ভাল্ব রিপেয়ার করা সম্ভব হচ্ছে ইদানীং।

কৃত্রিম হার্ট ভাল্ব ও হার্ট-লাংস মেশিন

কৃত্রিম হার্ট ভাল্ভ ও হার্ট-লাংস মেশিন
The world’s first heart lung machine. Image source: ibm.com

কৃত্রিম হার্ট ভাল্ব এবং হার্ট-লাংস মেশিন তৈরীতে ডাক্তার এবং ইঞ্জিনিয়াররা একসাথে কাজ করেছেন। হার্ট –লাংস মেশিন শুধু একটা মেশিনই নয়, এটা শরীরের অন্যতম দুটি প্রধান অঙ্গ যথাক্রমে হৃৎপিন্ড এবং ফুসফুসের কাজ সাময়িকভাবে চালু রাখতে পারে। এই দুটো অঙ্গ ঠিকমত কাজ না করলে মস্তিষ্কসহ সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অক্সিজেন এবং পুষ্টি সরবরাহ বিঘ্নিত হয়, এবং এগুলি স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।

মেশিনের ভিতর দিয়ে রক্তের প্রবাহ চলার সময় যাতে রক্ত জমাট বেঁধে না যায়, রক্ত কনিকা ভেঙ্গে না যায়, ঠিকমত রক্তচাপ-তাপমাত্রা-প্রবাহ সংরক্ষণ করা যায়, রক্তের অক্সিজেন বহন ক্ষমতা, জৈব রাসায়নিক স্বাভাবিকতা, অম্ল-ক্ষারের অনুপাত, প্লাজমা-কনিকার সমতা ইত্যাদি নানাবিধ ভারসাম্যের দিকে নজর দিতে হয়।

ভাল্বের ভিতর দিয়ে রক্ত প্রবাহের সময়ও এসবকিছুই বিবেচনায় আনতে হয়। রক্তচাপ, অক্সিজেন সরবরাহ, রক্ত-সরবরাহ (Cardiac output), জৈবরাসায়নিক বিক্রিয়া (Biochemical reaction) ইত্যাদি সঠিকভাবে কার্যকর রাখার জন্য বিজ্ঞানের বিভিন্ন পেশার বিশেষজ্ঞরা এখানে একসাথে কাজ করেন।

একবিংশ শতাব্দীর চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে একটি প্রবন্ধ

বিভিন্ন রকম কৃত্রিম হার্ট ভাল্ব

কৃত্রিম হার্ট ভাল্ব মোটাদাগে দুই ধরনের হয়ে থাকে যেমনঃ ১. মেকানিক্যাল হার্ট ভাল্ব (Mechanical heart valve) এবং ২. বায়োপ্রস্থেটিক হার্ট ভাল্ব (Bioprosthetic heart valve) যা নিচে পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হয়েছে।

১। মেকানিক্যাল হার্ট ভাল্ব (Mechanical heart valve)

মেকানিক্যাল হার্ট ভাল্ভ
World’s smallest mechanical heart valve. Image Source: twincities.com

মেকানিক্যাল হার্ট ভাল্ব পুরোটাই কৃত্রিম বস্তু দিয়ে তৈরী। এগুলো আবার আকৃতিভেদে বল এন্ড কেজ (Ball & cage), ডিস্ক ভাল্ব (Tilting disk valve, Bi-leaflet valve) হতে পারে। মেকানিক্যাল হার্ট ভাল্ব অনেক টেকসই যা সারাজীবন টিকে থাকতে পারে, কিন্তু এর উপর রক্ত জমাট বেঁধে যাবার প্রবনতা বেশী থাকাই সারাজীবন রক্ত পাতলাকারী ঔষধ যেমন ওয়ারফেরিন খেয়ে যেতে হয়।

ওয়ারফেরিনের ডোজ কম হয়ে গেলে রক্ত জমাট বেঁধে যায়, আবার বেশী হয়ে গেলে বিভিন্ন জায়গা থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে তাই নির্দিষ্ট সময় পর পর রক্তের পিটি- আইএনআর (PT-INR) পরীক্ষা করে সঠিক ডোজ নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। ওয়ারফেরিন ঔষধ সন্তানসম্ভবা মায়েদের দেওয়া যায়না কারন তা গর্ভস্থ ভ্রূণের ক্ষতি করতে পারে।

এছাড়া যাদের রক্ত সহজে জমাট বাঁধতে চায়না সেক্ষেত্রে, যাদের ক্রনিক লিভার ডিজিস আছে অথবা ষাটোর্ধ বয়সের রোগীদের ক্ষেত্রে সাধারনত যান্ত্রিক বা মেকানিক্যাল ভাল্ব ব্যবহার করা হয় না।

ক) বল এন্ড কেজ ভাল্ব (Ball & cage valve)

বল এন্ড কেজ ভাল্ব প্রথমে আবিষ্কৃত হলেও এতে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবনতা অত্যন্ত বেশী ছিল। ১৯৫২ সালে হাফনাগেল যে ভাল্ব ব্যবহার করেন, ১৯৬০ সালে সাইলাস্টিক বল (Silastic) ব্যবহারের মাধ্যমে Albert Starr (কার্ডিওভাস্কুলার সার্জন) এবং Miles Lowell Edwards (ইঞ্জিনিয়ার) উক্ত ভাল্বের উন্নতি সাধন করেন। এই ভাল্ব অনেকদিন টিকে থাকত কিন্তু রক্ত জমাট বেঁধে যাবার প্রবনতা বেশী থাকায় পরবর্তীতে ২০০৭ সালের পর এর ব্যবহার উঠে যায়।

খ) টিল্টিং ডিস্ক ভাল্ব (Tilting disc valve)

১৯৬৯ সালে বিইয়র্ক এবং শিলে (Bjork- Shiley) টিল্টিং ডিস্ক ভাল্ব (Tilting disc valve) তৈরী করেন। একটা ধাতব ফ্রেমের ভিতর একটা ডিস্ক এমনভাবে আটকিয়ে রাখা হয় যাতে এটা একদিকে খুলতে এবং বন্ধ হতে পারে। ধাতব পাতের উপর পাইরলাইট কার্বন (Pyrolite carbon) দিয়ে প্রলেপ দেওয়া থাকে অথবা পুর পাতটাই পাইরোলাইট কার্বন দিয়ে তৈরী হতে পারে।

পাইরোলাইট কার্বন অত্যন্ত শক্ত হওয়াই এটা সহজে ভেঙ্গে যায়না, আবার এর উপর রক্ত জমে যাওয়ার প্রবনতাও কম থাকে, ফলে, ওয়ারফেরিনের ডোজও কম লাগে। সেলাই দিয়ে আটকানোর জন্য ফ্রেমের সঙ্গে ফেল্ট জাতীয় জিনিষের আস্তরণ লাগানো থাকে।

গ) বাইলিফ্লেট ভাল্ব (Bileaflet valve)

আরও ১০ বছর পরে অর্থাৎ ১৯৭৯ সালে বাইলিফ্লেট ভাল্ব আবিষ্কৃত হয়। এটার ভিতর দিয়ে তুলনামূলকভাবে বেশী রক্ত প্রবাহিত হতে পারে এবং রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার প্রবণতা কিছুটা কম। এখনকার মেকানিক্যাল ভাল্বগুলো বেশীরভাগই Bileaflet ভাল্ব।

২। বায়োপ্রস্থেটিক হার্ট ভাল্ব (Bioprosthetic heart valve)

বায়োপ্রস্থেটিক হার্ট ভাল্ভ
Bioprosthetic Surgical Aortic Valves. Image Source: consultqd.clevelandclinic.org

বায়োপ্রস্থেটিক হার্ট ভাল্ব এর অপর নাম টিস্যু ভাল্ব হলেও টিস্যু ভাল্বে শুধুমাত্র প্রাণীজ টিস্যু ব্যবহার করা হয়, অপরদিকে বায়োপ্রস্থেটিক ভাল্বে প্রানীজ টিস্যু ছাড়াও কিছু কৃত্রিম বস্তু (Prosthetic material) ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পিউর টিস্যু ভাল্ভ খুব কমই ব্যবহৃত হয়ে থাকে, সুতরাং বায়োপ্রস্থেটিক ভাল্ব শব্দটা ব্যবহার করাই বেশী যুক্তিযুক্ত। বায়োপ্রস্থেটিক হার্ট ভাল্বের স্থায়িত্ব কম (২০-২৫ বছরের মত), সাধারণত ক্যালসিয়াম জমে ভাল্বগুলো নষ্ট হয়ে যায়।

তবে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার প্রবনতা কম থাকায়, প্রথম তিন মাস ওয়ারফেরিন লাগে, পরবর্তীতে এস্পিরিন জাতীয় ঔষধ দিলেই কাজ হয়। এই ভাল্ব সাধারণত ৬০ বছর বয়সের বেশী রোগীদের, সন্তান গ্রহনে ইচ্ছুক মহিলাদের ক্ষেত্রে, যাদের ক্রনিক লিভার ডিজিস রয়েছে, অথবা রক্ত জমাট না বাঁধার রোগ রয়েছে, যারা সহজেই আহত হতে পারেন এসব ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

প্রকারভেদে বায়োপ্রস্থেটিক হার্ট ভাল্ব কয়েক ধরনের হয়ে থাকেঃ

ক) অটোগ্রাফট (Autograft)

নিজের শরীরের একটা ভাল্ব কেটে যখন অন্য ভাল্ব হিসাবে ব্যবহার করা হয়। রস (Ross procedure) পদ্ধতির কথা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে।

খ) হোমোগ্রাফট (Homograft)

মৃত মানুষের শরীর থেকে মৃত্যুর অব্যবহিত পরেই (সাধারন তাপমাত্রাই ৬ ঘন্টা, সাথে সাথে ফ্রিজিং করলে ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত) ভাল্ব সংগ্রহ করে নিলে অন্য ব্যক্তির শরীরে তা প্রতিস্থাপন করা যায়। এখানে রক্তের গ্ররুপ মিলানোর কোন দরকার হয়না, কারন ভাল্বের কোন রক্ত সরবরাহ থাকে না। বিভিন্ন রকম ট্রিটমে ফলে এর এন্টিজেন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এই ভাল্বগুলো প্রত্যাখ্যাত হয়না।

গ) জেনোগ্রাফট (Xenograft)

শুকরের (Porcine) ভাল্বের সঙ্গে মানুষের ভাল্বের সাইজ মেলে বলে, এই ভাল্ব ব্যবহার করা হয়ে থাকে। গরুর হার্টের পর্দা (Bovine pericardium) থেকেও এই ভাল্ব প্রস্তুত করা হয়ে থাকে।

পোরসিন ভাল্ব অনেক সময় অক্ষত অবস্থায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ভাল্বের সাথে কিছু মাংশপেশী লেগে থাকার ফলে রক্তপ্রবাহ কিছুটা বাধাগ্রস্থ হয়, এবং এই ভাল্ব লাগানোও বেশী কষ্টসাধ্য। ফলে শুকরের কয়েকটা ভাল্ব থেকে একই সাইজের তিনটা লিফলেট নিয়ে কৃত্রিম রিংএর ভিতর সেলাই করে লাগিয়ে একটা ভাল্ব তৈরী করা হয়। আবার গরুর পেরিকার্ডিয়াম সংগ্রহ করে তাতে বিভিন্ন কেমিক্যাল প্রয়োগ করে জীবাণু নাশ করে, এন্টিজেনেসিটি বিনষ্ট করে, সহজে যাতে ক্যালসিয়াম না জমতে পারে সে ব্যবস্থ্যা করে ভাল্ব তৈরি করা হয়।

বায়োপ্রস্থেটিক হার্ট ভাল্ব ব্যবহারের প্রক্রিয়া

টিস্যু যাতে সহজে নষ্ট হয়ে না যেতে পারে সেইজন্য গ্লুটারাল্ডিহাইড দিয়ে (Glutaraldehyde fixation) ট্রিটমেন্ট করা হয়। গ্লুটারালডিহাইড জীবানু নাশ করে ফেলে, টিস্যুর ভিতরকার এনজাইম নষ্ট করে দেয় যাতে টিস্যু গলে যেতে না পারে, টিস্যুর ভিতরকার আঁশ গুলোর ভিতর বন্ধনী (Collagen cross linkage) তৈরী করে এগুলোকে শক্ত করে তোলে।

গ্লুটারাল্ডিহাইড জমে থাকলে এবং টিস্যুতে চর্বির পরিমাণ (Phospholipid load) বেশী থাকলে সহজেই ক্যালসিয়াম জমে ভাল্ব নষ্ট হয়ে যেতে পারে, সেজন্য অ্যালকোহল জাতীয় বিভিন্ন পদার্থ দিয়ে এতে জমে থাকা এল্ডিহাইড, ফ্যাট এবং ফস্ফোলিপিডের মাত্রা কমিয়ে আনা হয়। আগে গ্লুটারাল্ডিহাইড ট্রিট্মেন্টের সময় অত্যধিক চাপ প্রয়োগ করা হত, এখন সেটা কমিয়ে এখন অল্প চাপে অথবা শুন্য চাপে (উভইদিকে সমান চাপ প্রয়োগ করে) টিস্যু ফিক্সেশন করা হয়। ফলে টিস্যুর স্থায়ীত্ব বৃদ্ধি পায়।

বাজারে যে সমস্ত বায়োপ্রস্থেটিক হার্ট ভাল্ব পাওয়া যায়

বহু পরীক্ষিত টিস্যু ভাল্ভ
The most common and tested tissue valve

বর্তমানে বিভিন্ন ট্রিট্মেন্টের ফলে অত্যন্ত ভালো মানসম্মত ও অধিকতর স্থায়ী ভাল্ব প্রস্তুত করা সম্ভব হচ্ছে, সেই সাথে ভাল্বের দামও বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বাড়ছে কোম্পানীগুলোর ভিতর বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতা। ক্যাথেটার দিয়ে স্থাপনের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভাল্ব তৈরি হয়েছে যা হার্টের চার ধরনের ভাল্বই প্রতিস্থাপন করতে পারে। বায়োপ্রস্থেটিক হার্ট ভাল্ব গবেষণা এবং বাজারজাতকরণে এগিয়ে আছে সবচেয়ে তিনটা ভাল্ব প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। এগুলো হচ্ছেঃ

  • Saint Judes medical
  • Edward Lifesciences
  • Medtronic।

কোম্পানিগুলোর বহু পরীক্ষিত টিস্যু ভাল্বগুলোর মধ্যে রয়েছে যথাক্রমেঃ

  • এপিক (Epic)
  • পেরিমাউন্ট (Perimount)
  • হ্যানকক ২ (Hankok 2)

আর নতুন ধরনের ভাল্বগুলো হচ্ছে যথাক্রমেঃ

  • Trifecta
  • Magna
  • Mosaic

এছাড়াও Sorin এর রয়েছে Mitroflow এবং  The Sorin Freedom SOLO Stentless Tissue Valve, St. Judes Medical এর Toronto SPV,  Medtronic এর  Freestyle ভাল্ব।

ক্যাথেটার এর মাধ্যমে প্রতিস্থাপনযোগ্য ভাল্ব তৈরির জন্য চলছে প্রতিযোগিতা, কে কাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে এই বিষয়ে। সেলাই ছাড়া বসানো যায় (Sutureless valve) এমন ধরনের ভাল্ব, একবার বসানো ভাল্ব সরু হয়ে গেলে ভাল্বের ভিতরে বসানোর মত ভাল্ব (Valve in Valve) ইত্যাদি সারাবিশ্বে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে সমস্যা প্রাপ্যতা নিয়ে নয়, সমস্যা প্রশিক্ষন নিয়েও নয়, সমস্যা এগুলোর উচ্চমূল্য এবং ব্যয় সংকুলান নিয়ে।

বায়োইঞ্জিনিয়ারড হার্ট ভাল্ব (Bioengineered valve)

বায়োইঞ্জিনিয়ারড ভাল্ভ
implantable heart valve, made of a new kind of living tissue. (Image Source: tcbmag.com, Photo courtesy of: Tranquillo Lab, University of Minnesota & tcbmag.com)

গত কয়েক দশক ধরে গবেষনা চলছে বায়োইঞ্জিনিয়ারড ভাল্ব (Bioengineered valve) তৈরীর জন্য। গবেষনাগারে প্রতিস্থাপন করে দেখা হলেও এগুলো এখনও পর্যন্ত বাজারজাতকরন হয়নি। এই ধরনের ভাল্ব তৈরী করতে গেলে দুটো বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। এক হচ্ছে কাঠামো তৈরী এবং অন্যটা হচ্ছে উপযুক্ত কার্যকরী কোষ তার উপর প্রতিস্থাপন করা।

কাঠামো (Scaffold) তৈরীর কাজে প্রাণী বা মানুষের হার্ট নিয়ে তার কোষগুলো ফেলে দিতে হবে (Decellularization) তারপর রোগীর শরীর থেকে স্টেম সেল (Stem cell, Progenitor cell) নিয়ে এর উপর সংযোজন করতে হবে। তারপর এটাকে রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা যাবে। প্রত্যেক রোগীর উপযুক্ত কাঠামো তৈরীর জন্য ত্রিমাত্রিক প্রিন্টিং (3-D Printing) ব্যবহার করা যেতে পারে।

কাঠামো তৈরীতে প্রাণীজ কাঠামো ছাড়াও কৃত্রিম বা প্রাকৃতিক পলিমার, ন্যানোফাইবার ব্যবহার করা যেতে পারে। বাচ্চা জন্ম নেবার সময়ই তার নাড়ী (Umbilical cord) থেকে রক্ত সংগ্রহ করে ক্রায়োপ্রিজারভ (Cryopreserve) করে রাখা যেতে পারে, এতে প্রচুর পরিমানে স্টেম কোষ থাকে যা ব্যবহার করে যে কোন ধরনের অঙ্গ তৈরী করা সম্ভব হবে, এগুলো অল্পদিনের ভিতরেই চুড়ান্ত বাস্তবতায় পরিনত হবে।

PCL-PLLA Heart Valve নিয়ে গবেষনাপত্র ইতোমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। গবেষনায় আরও চেষ্টা করা হচ্ছে প্রতিস্থাপনের পর এই ভাল্ভগুলো কোন ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গেলে যাতে আশপাশ থেকে উপযুক্ত কোষ সংগ্রহ করে স্বেচ্ছাই সেরে উঠতে পারে। বর্তমানে আমাদের দেশেও এই জাতীয় গবেষনা করা সম্ভব এবং আমরা এ ব্যাপারে সচেষ্ট রয়েছি।

উপসংহারঃ

রিউমেটিক হার্ট ডিজিস এখনও আমাদের দেশে অন্যান্য অনেক দেশের চেয়ে বেশী। আমাদের পুরো উপমহাদেশ জুড়ে এবং দক্ষিন এশিয়ার দেশগুলোতে এর প্রকোপ বেশী। আমাদের গড় আয়ু বাড়ছে, সাথে সাথে বাড়ছে আপজাত্য (Degenerative) ভাল্ভের রোগীর সংখ্যা। হার্টের ভাল্ভের রোগ এবং হার্টের ভাল্ব রিপ্লেসমেন্ট নিয়ে আমাদের আরও ভাবতে হবে, গবেষনা করতে হবে, অল্প খরচে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। সাথে সাথে রোগ প্রতিরোধের চেষ্টাও অব্যাহত রাখতে হবে।

ঔষধ শিল্প; উদ্ভাবন থেকে মান নিয়ন্ত্রণ সস্পর্কে জানতে পড়ুন।


Tags: প্রস্থেটিক ভাল্ববায়োইঞ্জিনিয়ারড ভাল্ববায়োপ্রস্থেটিক হার্ট ভাল্বহার্ট ভাল্ভহার্ট-লাংস মেশিন
ShareTweetPin4
Previous Post

একটোপিক প্রেগনেন্সি (Ectopic Pregnancy); দরকার বাড়তি সতর্কতা!

Next Post

থ্রিডি প্রিন্টারে তৈরি বাড়ি ও বিশ্বের প্রথম থ্রিডি আবাসন প্রকল্প

Rezwanul Hoque Bulbul

Rezwanul Hoque Bulbul

Ex-Chairman, Department of Cardiac Surgery at Bangabandhu Sheikh Mujib Medical University-BSMMU.

Please login to join discussion

সম্প্রতি প্রকাশিত

অব-বিলুপ্তিকরন (De-Extinction)

অব-বিলুপ্তিকরন (De-Extinction, Resurrection Biology, Species Revivalism)

April 15, 2025
সাইবর্গ

সাইবর্গ (Cyborg) এবং সামনের দিনের মানুষ!

April 3, 2025
Human habitation on other planets!

গ্রহান্তরে মানুষের বসবাস- সমস্যা এবং সম্ভাবনা!

March 19, 2025
ADVERTISEMENT

জনপ্রিয় লেখা

মহাকাশ পর্যটন

মহাকাশ পর্যটন; কল্পকাহীনি থেকে বাস্তবতা!

November 2, 2020
নীলগিরি

নীলগিরি ভ্রমণ! মেঘ ছুয়ে দেখার ইচ্ছেটা পূরণ হবে এখানে

February 22, 2021
চাকরির খবর

চাকরি খুজছেন? জেনে নিন চাকরির খবর কোথায় কিভাবে পাবেন।

December 2, 2020
নগদ মোবাইল ব্যাংকিং

নগদ মোবাইল ব্যাংকিং; সাশ্রয়ী ও নির্ভরযোগ্য ডিজিটাল আর্থিক সেবা।

November 23, 2020
  • Privacy Policy
  • Home

© 2018 মুক্তপ্রান all right and reserved.

No Result
View All Result
  • মূল পাতা
  • লাইফস্টাইল
  • ভ্রমণ
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • স্বাস্থ্য কথা
  • ইতিহাস
  • রহস্য
  • রিভিউ
  • বৈশ্বিক
  • পরামর্শ

© 2018 মুক্তপ্রান all right and reserved.

This website uses cookies. By continuing to use this website you are giving consent to cookies being used. Visit our Privacy and Cookie Policy.