এন্টার্কটিকার সাদা বরফের মাঝে রক্তের ঝর্ণা! হঠাৎ করে দেখে যে কেউ ভয় পেয়ে যেতে পারেন আর এটাই স্বাভাবিক। মনে মনে ধারনা করে নিতে পারেন ভয়ঙ্কর হত্যার দৃশ্য। ব্যাপারটা ভাবতেই কেমন জানি বিস্ময় জাগে। বিশাল বরফে মোড়ানো পাহাড় থেকে ঝর্না দিয়ে পানির বদলে চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে লাল রক্ত। আরো অবাক করা ব্যাপার হলো হিমাঙ্কের নিচে যেখানে সবকিছু জমে যাওয়ার কথা সেখানে লাল রক্তের মতো পানির ধারা প্রবাহমান! কেন? আসুন জানা যাক যুগ যুগ ধরে চলে আসা এন্টারটিকার এ রহস্য কথা।
১৯১১ সালে অস্ট্রেলিয়ান ভূতাত্ত্বিক গ্রিফিথ টেলর প্রথম খুঁজে পেয়েছিলেন এই রক্ত ঝর্ণাটি। এটি মূলত আয়রন অক্সাইড মিশ্রিত লবনাক্ত পানির উপত্যকা যা পূর্ব এন্টারটিকার টমাস গ্লেসিয়া থেকে প্রবাহিত হচ্ছে। ভূতাত্ত্বিকদের ধারনা মতে এটি উৎপত্তি হয়েছে আনুমানিক ২০ লাখ বছর আগে।
বিজ্ঞানীদের গবেষণা মতে এই লাল রঙের পনি উৎস মূলত অতিরিক্ত লবনাক্ত পানি আর খনিজ লোহার মিশ্রণ যা বাতাসের সাথে বিক্রিয়া করে লাল রঙ ধারণ করে। বিষযটি অনেকটা এরকম যে, লোহাতে মরিচা ধরলে যেমন লাল রং হয়ে যায়, ঠিক একইভাবে এই পানি লাল রং ধারণ করে। আয়রনযুক্ত লোনা পানি যখন বাতাসের সাথে মেশে তখন বাতাসের অক্সিজেনের সাথে আয়রন কিক্রিয়া করে পানির রং লাল হয়ে যায়।
আলাস্কা ফেয়ারব্যাংক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন যে, এই রক্ত ঝর্ণা (Blood Falls) প্রবাহিত হচ্ছে প্রায় ১৫ লক্ষ বছর ধরে যা আসলেই বিস্ময়কর। যারা এডভেঞ্চার প্রিয় তারা ঘুরে আসতে পারেন এন্টারটিকার সাদা বরফের ঢাকা প্রান্তরে এই রহস্যঘেরা রক্তের ঝর্ণাটি।